বর্তমানে একটি ছোট ব্যবসা পরিচালনার জন্য যে বিষয়গুলো আপনাকে অনুসরণ করতেই হবে।

বর্তমান সময়ে চোখের আড়ালে হাজার হাজার ফিজিক্যাল ও ডিজিটাল ব্যবসার জন্ম হচ্ছে। মানুষের চাহিদা এখন শুধু খাওয়া, দাওয়াতেই আর ঘুমেই সিমাবদ্ধ নয়। মানুষের চাহিদা বেড়েছে আগের চেয় বহুগুন। দামি ফোন-ল্যাপটপ  ব্যবহার থেকে শুরু করে বিশ্বের সুন্দরতম দৃশ্যতে ও দামি রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া আজ চাহিদার বাইরে নয়। তাই আমাদের নিজেদেরও অনেক বড় স্বপ্ন বা চাহিদার জন্ম হয়েছে অজান্তেই। আমি বিশ্বাস করি ছোট একটি বিজনেস আপনার জীবনের অনেক  স্বপ্নেরই  মিলন ঘটাতে পারে। বর্তমান সময়ে অনেক লোক দিব্যি চাকরির পাশাপাশি ছোট বিজনেস করে আরাম ও স্বাচ্ছন্দের সাথে জীবন অতিবাহিত করছে।

ছোট একটি ব্যবসা শুরু করতে গেলে অনেকগুলো বিষয়ে আপনাকে জানা থাকতে হবে। গতাণুগতিক চিন্তার বাইরে স্বপ্নের ব্যবসাটাকে আপটেড রাখতে হবে। যারা ছোট ব্যবসা শুরু করবেন বলে ভাবছেন তাদের জন্য খুব উপকারে আসবে নিচের আপডেট গুলো  । যারা ব্যবসাতে রানিং আছেন তাদেরও উন্নতি করতে সহায়তা করবে আজকের আপডেট।

মার্কেট রিসার্চ করুনঃ আপনি যে বিষয়টি নিয়ে ছোট একটি ব্যবসা শুরু করতে চান তার চাহিদা কেমন এটা জানা সবার আগে জরুরি। ব্যবসার ধরণ বুঝে সার্ভে কষে আইডিয়া নিতে পারেন। অনলাইন ভিত্তিক কোন ব্যবসা হলে এসইও এক্সপার্ট এর কাছে থেকে চাহিদা শিট নিয়ে সে মোতাবেক হিসাব করতে পারেন। চাহিদাকে বেশী গুরুত্ব দিয়ে আপনি ব্যবসার কৌশল কাজে লাগিয়ে ভাল প্রফিট করতে পারেন। তাই প্রতিটা সার্ভিস বা পন্যকে সঠিক ভাবে উপস্থাপনা করেই আপনি ব্যবসার শুরুটা করতে পারেন। বড় বড় প্রতিষ্টান প্রচুর টাকা খরচ করে মার্কেট রিসার্চ করতে যেন তাদের বাজেট তৈরি করতে সহজ হয়।

ব্যবসার আইডিয়া নির্ধারণ করুনঃ আইডিয়ার উপর সম্পূর্ণ ব্যবসা নির্ভরশীল। আপনার আইডিয়া গুলো হতে হবে সেবা বা পন্যের উপর ভিত্তি করে এবং যারা আপনার সার্ভিস নিবে তাদের উপর ভিত্তি করে। একটি আইডিয়া আপনার জীবন পালটে দিতে পারে। ব্যবসা ছোট-বড় যাই হোক, কাজ গুলোকে ভাগ ভাগ করে নিয়ে করতে হবে। একা সব কাজ সম্ভব হবে না এটাই স্বাভাবিক। এমন কারও কাছে কন্সাল্টেন্সি নিতে হবে যারা দক্ষ ও অভিজ্ঞতা আছে  যেন ব্যবসার সব কনফিশন দূর পারেন। কনফিউশন মাথায় নিয়ে কোন কাজই  ভালভাবে করতে পারবেন না। মনে রাখবেন কাজের প্ল্যানই কিন্তু কাজের অর্ধেক। তাই, আপনার সক্ষমতা ও সাপেক্ষতা মাথায় রেখেই একটি ছোট ব্যবসার প্ল্যান শুরু করুন। আর সেই প্ল্যান ধরেই আপনার নিজের প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ড তৈরি করে ফেলুন।

নিজেকে প্রস্তুত করুনঃ একটি ব্যবসা শুরু করছেন মানে আপনি আপনার বস এবং আপনি অনেকটাই স্বাধীন। নিজেই নিজের কাছে জবাবদিহিদা করবেন, নিজেই নিজেকে খাটিয়ে নেবেন এমন ভাবে নিজেকে তৈরি করে ফেলুন। তাহলে আপনি নিজেকে ও সহযোগিদের থেকে ভাল কোয়ালিটির কাজ আদায় করে নিতে পারবেন। চিন্তা করুন, আপনার পরিকল্পনা ও ছোট একটি ব্যবসা সমসাজে ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। তাহলে প্রতিদিন নিজের কাছে তৃপ্তি পাবেন যে হ্যা আমার দ্বারা মানুষের উপকার তো হচ্ছে আমার উপকারও আমি করতে পারছি।

ব্যবসায়িক এরিয়া নির্বাচনঃ আপনার ছোট ব্যবসাটি আসলে কোন এরিয়াতে করবেন? সারা বাংলাদেশেই ব্যবসা করবেন? নাকি একটি নির্দিষ্ট এলাকাই ব্যবসা করবেন? আপনার কি কোন ফিজিক্যাল বিজনেস পয়েন্ট তাকবে নাকি থাকবে না?  আপনি কি কাস্টমার এর কাছে যাবেন?  নাকি কাস্টমার আপনার কাছে আসবে? আফটার সেল আপনি কি সার্ভিস দেবেন? নাকি দেবেন না? ডেলিভারি ব্যবস্থা কি হবে বা সার্ভিসিং সিস্টেম কেমন হবে এমন হাজারো প্রশ্ন চলে আসবে বিজনেসের শুরুতেই। তাই আপনি ঠিক কোথায় থেকে কোন সিস্টেমের মাধ্যমে সেবা দিতে চান সেটা ঠিক করে ফেলুন। সে মোতাবেক ব্যবসার সাব সেক্টর গুলো কাস্টমার এর জন্য সহজ করে দিন। তাহলে আপনার বিজনেসের গতিশীলতা অক্ষুন্ন থাকবে।

মার্কেটিং এর জন্য প্রস্তুতি নিনঃ আপনি অলরেডি মার্কেট রিসার্চ করেছেন ও নিজেকে ব্যবসার জন্য মানুষিক ভাবে প্রস্তুত করেছেন ।ত সার্ভিস সিস্টেমটিও রেডি করে ফেলেছেন । এখন সেলিং বা সার্ভিসিং শুরুর পালা। তাহলে ব্যবসাটিকে এখন মানুষের সাথে পরিচিত করাতে হবে, যেন তারা এটা নিশ্চিত হতে পারে অমুক জায়গায় অমুক জিনিস পাওয়া যায়। বা এই জায়গায় এই সেবা পাওয়া যায়। জানেন তো, প্রচারেই প্রসার। মানুষের মাঝে জানাজানি হলে আপনার সেল আসতে শুরু করবে, কাস্টমার ভিজিট করতে শুরু করবে। এর পরেও মার্কেট রিসার্চ কৌশল আপনাকে রপ্ত করতে হবে বেশি বেশি কাস্টমারকে জানানোর জন্য। কাস্টমার এর কাছে আরো তথ্য পৌছানোরর জন্য আপনাকে কাজ করতে হবে মার্কেটিং নিয়ে। এর মাঝেই সেল শুরু  হবে । কাস্টমার এর ক্যাটাগরি নির্বাচন করে মার্কেটিং শুরু করতে হবে।

মার্কেটিং কিভাবে করবেনঃ আপনার ব্যবসার ধরণ এর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রকম মার্কেটিং আপনি পারে। তবে বর্তমানে যে কোন ব্যবসাকে মানুষের কাছে পৌছে দিতে ডিজিটাল মাধ্যমের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ন। যারা আপনার থেকে পণ্য বা সেবা নিচ্ছে তাদের রিভিউ ও মাতামত অন্যদের জানিয়ে অন্যদের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে পারলে ভাল রেসপন্স পাওয়া যাবে। মার্কেটং কৌশল এর জন্য আপনার প্রতিদ্বন্দীরা কি করছে তার চাইতে উন্নত কিছু করার চেষ্টা করুন। একটি ছোট টোকেন থেকে শুরু করে ফেসবুক/গুগল এড এর মাধ্যমে আপনার সেবা ছড়িয়ে দিতে পারেন। তবে মনে রাখার বিষয়, আপনাকে অবশ্যই বাজেটের মধ্যে সঠিক ম্যানেজমেন্ট এর মাধ্যমে মার্কেটিং ও সেবাদান করতে হবে। অবশ্যই, ব্যবসাকে এনালাইসিস করবেন আরো ভাল রেজাল্ট পেতে।

মার্কেটিং প্রযুক্তিঃ মার্কেটিং করেই আপনার কাজ শেষ ব্যাপারটি এমন নয়। কারন একদিন মার্কেটিং করলে  ১ মাস তার রেশ কাস্টমার এর মাথায় চলতে থাকে। তাই আপনার সেবার প্রতি আগ্রহী মানুষকে আপনার কাস্টমারে পরিণত করতে লাইভ সাপোর্ট সিস্টেম চালু রাখুন। প্রয়োজনে অটোমেটিক ভাবে তাদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে পার্সেস রেইট বাড়িয়ে নিন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন মার্কেটিং প্রযুক্তি  অবলম্বন করতে পারেন। ভাল কোনা মার্কেটারের সহয়তা নিন বা এমন কাউকে নিয়োগ দিতে পারেন। কারন আপনার একার পক্ষে সব কাজ করা সম্ভব হবে না।

সেবা ও নিশ্চয়তাঃ আপনি যে ব্যবসাটি করছেন তার উপর প্রতিদিন জ্ঞান অর্জন করতে থাকুন। জানার চেষ্টা করুন আপনার কাস্টমার কি কি জানতে চায় ও কিভাবে তাদের সেবা নিশ্চিত করা যায়। তারা যেন তাদের প্রয়োজনে সর্ব প্রথম আপনার সার্ভিসেরর কথা মনে করে। তাদের এটা নিশ্চিত করুন যে আপনি যা দিচ্ছেন তা বেস্ট টাই দিচ্ছেন।

ব্যবসা ছোট হোক আর বড় হোক এটি একটি সুন্দর ম্যানেজমেন্ট এর ফল। কেউ চাইলে একদিনে ব্যবসায় সফল হতে পারে না। ব্যবসয়া সম্পর্কিত অনেক বই আইডিয়ার উন্নতি ঘটাতে পারে। মানি ম্যানেজমেন্ট সঠিক ভাবে না হলে ব্যবসার পা ভেঙ্গে যেতে পারে। আর অবশ্যই ব্যবসাতে অনেক রহমত রয়েছে। এর সঠিক ম্যানেজমেন্ট অবশ্যই করবেন। কারন অনেকের অধিকারের বা পাওয়ার একটা মাধ্যম হচ্ছে ব্যবসা। আশা করি একটি ছোট ব্যবসা শুরু করতে আপনি আরো আগ্রহী হয়ে উঠবেন ও একটি সুন্দর আইডিয়াকে সবার সামনে আনতে পারবেন।

0
0
Rakibul Islam Khan

Rakibul Islam Khan

writing is my passion. I like to write and expression many vision to other. Before writing I lesson many thing. My concern on welfare of human Being that have scientific explanations.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *