কাদের দোয়া কারেন্ট এর মত কবুল হয় আল্লাহর দরবারে ?
জানেন কি? কিছু বিশেষ ব্যক্তি রয়েছেন, যাদের দোয়া আল্লাহ খুব দ্রুত কবুল করেন। আমাদের উচিত তাদের সাথে সবসময় উত্তম ব্যবহার করা এবং তাদের থেকে দোয়া চাওয়া। সেই বিশেষ ব্যক্তিগন হলেন-
১। পিতা-মাতাঃ আব্বা-আম্মার দোয়া আল্লাহ খুব দ্রুত কবুল করেন। তাদের দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না। তাই আব্বা-আম্মা ও মুরব্বিদের কাছে আমাদের দোয়া চাওয়া উচিত। আমরা আব্বা-আম্মাকে রেখে বিভিন্ন দরবারে যাই। আসল দরবার যে আমার ঘরে তাই ভুলে যাই। আমার জন্য আমার আব্বার চেয়ে বড় পীড় সাহেব আর কেউ হতে পারে না। আমার জন্য আমার আম্মার চেয়ে বড় পীড় সাহেবা আর কেউ হতে পারে না।
২। মুসাফিরঃ মুসাফিরের দোয়া আল্লাহ খুব দ্রুত কবুল করেন। এজন্য সফরে বের হলে আমাদের দোয়া করা উচিত। একই সাথে যারা সফরে বের হন, তাদের কাছেও দোয়া চাওয়া উচিৎ।
৩। মজলুমঃ মজলুমের দোয়া আল্লাহ দ্রুত কবুল করেন। তাই মজলুম অবস্থায় আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা উচিত। আল্লাহ তায়ালা মজলুমের দুয়া ফিরিয়ে দেন না। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) বলেন- ‘ মজলুমের দুয়াকে ভয় করো। কারণ, ‘মজলুমের দুয়া আর আল্লাহর মধ্যে কোন পার্দা থাকে না’।
৪। অপর ভাইয়ের জন্য দুয়াকারী ব্যক্তিঃ ‘কেউ যখন অগোচরে অপর ভাইয়ের জন্য দুয়া করে, তখন আল্লাহ তার দুয়া কবুল করেন।’ তাই নিজের পাশাপাশি অন্যের জন্য দুয়া করা উচিত। অন্যের জন্য দুয়া করলে নিজেরও লাভ আছে। কেউ যখন অন্যের জন্য দুয়া করে, তখন ফেরেশতারা বলতে থাকে- ‘হে আল্লাহ! আগে তার দুয়া কবুল করে নাও’ (সহিহ মুসলিমঃ ২৫৬)
মনে করুন, আপনি দুয়া করলেন- ‘হে আল্লাহ! আমার এই ভাইটার টাকা পয়সা নেই, তুমি তাকে ধনী বানিয়ে দাও।’ তখন ফেরেশতারা বলবে – ‘হে আল্লাহ! যে দুয়া করছে, আগে তাকে ধনী বানিয়ে দাও।’ আপনি দুয়া করলেন- ‘হে আল্লাহ! আমার এই ঐ ভাইকে তুমি সুস্থ করে দাও।’ ফেরেশতারা বলবে – ‘হে আল্লাহ! আগে যে দুয়া করছে, আগে তাকে সুস্থ করে দাও দাও।’
তাই নিজের জন্য দোয়া করার পাশাপাশি যাদের দোয়া কবুল হয় তাদের থেকে দুয়া চাওয়া উচিত। দুয়া এমন আলোকরশ্মি – যা অন্ধকারে পথ দেখায়। পথের সব শত্রুকে উপড়ে ফেলার শক্তিশালি হাতিয়ার দুয়া। মুমিন জীবনে দুয়াই সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। দুয়া ইবাদাতের প্রাণ। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক কেমন তা বোঝা যায় দুয়ার ধরন থেকে। সে বোঝে, আল্লাহকে তার চাই-ই-চাই। তার সাহায্য ছাড়া সে অচল। রাসূল (সা.) দুয়ার সময় নিজেকে আল্লাহর কাছে অতি তুচ্ছ ও নগণ্য করে উপস্থাপন করতেন।
রাসুল (সা.) বলতেন- ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার দাস, দাসের ঘরের দাস, দাসীর ঘরের দাস। আমার মাথার চুলের গোছা আপনার হাতের মুঠোয়; আপনি যেদিক টানবেন আমি সে দিকে যেতে বাধ্য। আপনি যা চান, আমার ওপর তা-ই ঘটাতে পারে।’