দোয়া কবুলের সুন্নাতী আদব ও শর্তাবলি যা মানলেই দোয়া কবুল হবে ইনশাল্লাহ

“ হে আমাদের রব, আমাদের দুনিয়ায় কল্যান দিন, আখিরাতে কল্যান দিন এবং জাহান্নামের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করুন”। (সূরা বাকারাঃ ২০১)

 এটা সবচেয়ে বিস্তারিত দোয়া যা খেয়াল করলে দেখব চাওয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সবই দোয়াতে চাওয়া যায়। ইহকাল ও পরকালের সব কিছুর দোয়া করা যায়। আল্লাহ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের উভইয়ের দোয়া করতে শিখিয়েছেন। এমনকি জুতার ফিতা ছিড়ে গেলেও আল্লাহর দরবারে দোয়া চাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

অনেকেই বলে দোয়া তো করি কিন্তু কবুল হয় না। দোয়ার জন্য কিছু আদব ও শর্ত রয়েছে যা আমাদের নবী ও রাসূল (সা.) আমাদের শিখিয়ে গেছেন দোয়া করার মাধ্যমে। আমাদের দয়ার নবী মায়ার নবী আমাদের জন্য তার শাফায়াতের দোয়া রেখেছেন, শেষ বিচারের দিন তিনি তার উম্মাতের জন্য সে দোয়া করবেন আল্লাহর কাছে। প্রিয় নবীর প্রিয় উম্মাত হিসাবে আল্লাহ আমাদের কবুল করে নেন (আমিন)। ইনশাল্লাহ আদব মেনে দোয়া করলে আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীন তা কবুল করবেনই করবেন। দোয়া সব সময় করা যায় তবুও কিছু আদব রয়েছে যা মানলে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

১। দোয়ার আগে সুযোগ থাকলে অজু করে নিন

২। কিবলামুখী হয়ে দোয়া করুন। কিবলামুখী হয়ে নামাজ পড়া ফরজ, কিন্তু দোয়া করা ফরজ না। তবে কিবলামুখী হয়ে দোয়া করলে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

৩। হাত তুলে দোয়া করুন। বিশেষ দোয়া হাত তুলে করা উত্তম এতে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। রাসূল (সা.) যেসব জায়গায় হাত তুলেছে সেসব জায়গায় হাত তুলে দোয়া করুন। সাধারণ দোয়া পড়ার জন্য হাত তোলা অপ্রয়োজনীয় যেমন, ঘুমের দোয়া, মসজিদে প্রবেশের দোয়া ইত্যাদি।

৪। দোয়ার শুরুতে আল্লাহর প্রশংসা ও তারিফ করুন। নবির প্রতি দরুদ পড়ুন।

৫। দোয়া করার সময় আল্লাহ রাব্বুক আলামিনের শানে চোখের পানি ফেলুন। আল্লাহর রাহে চোখের পানি কখনো বৃথা যায় না। 

৬। সুযোগ পেলে একান্তে নিরবে দোয়া করুন। আল্লাহর সাথে ওয়ান টু ওয়ান দোয়া ফলপ্রসূ হয়।

৭। দোয়ার ভিতর নিজের পাপ স্বীকার করুন, নতজানু হয়ে কাতর কন্ঠে মাফ চান। আল্লাহ তায়ালা আপরাধীর আত্মস্বীকৃতিকে পছন্দ করেন এবং তাতে সন্তুষ্ট হয়ে গুনাহ ক্ষমা করেন।

৮। দোয়াতে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে কাকুতি-মিনতি করুন। কাকুতি-মিনতি ছাড়া দোয়া আসলে পরিপূর্ণ হয় না।

৯। দোয়া করুন ৩ বার। দোয়াতে কোন জিনিস তিনবার চাওয়া বেশ উচ্ছ্বাস মূলক আদব। এতে দোয়াকারীর প্রয়োজনের মাত্রা বোঝা যায়।

১০। আল্লাহর সিফাতি নামে দোয়া করুন। দোয়া করার সময় আল্লাহর সুন্দর নাম ধরে দোয়া করুন। গুনাহ মাফ চাওয়ার সময় বলুন – ইয়া গাফফার, ইয়া গফুর, রিজিক চাওয়ার সময় বলুন – ইয়া রাজ্জাক, রহমত চাওয়ার সময় বলুন – ইয়া রহমান, ইয়া রহিম ইত্যাদী।

১১। নিজেকে আল্লাহর কাছে ছোট করে উপস্থাপন করুন।

১২। দোয়ার শেষে আমিন বলুন। এটা সুন্নাত। নামাজে ইমাম সাহেব যখন সূরা ফাতিহা পড়ে তখন আমিন পড়ুন। আমাদের আমিন যদি ফেরেশতাদের আমিন এর সাথে মিলে যায় তাহলে আল্লাহ আমাদের জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন । 

১৩। দোয়ার পর দুই হাত মুখে নিয়ে মাসেহ করা করুন।

এ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে দোয়া করতে পারলে ইনশাল্লাহ, আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করবেন। 

0
0
Rakibul Islam Khan

Rakibul Islam Khan

writing is my passion. I like to write and expression many vision to other. Before writing I lesson many thing. My concern on welfare of human Being that have scientific explanations.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *