মসজিদে নারী-পুরুষ নামাজ ও মসজিদ সুসজ্জিতকরন

মসজিদে নারী-পুরুষ একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে কি না
মসজিদ কে বলা হয় আল্লাহর ঘর। সেখানে কেবলমাত্র তাঁর ই ইবাদত করা হয়। ইবাদতের নামে বাড়াবাড়ি হয় এমন কিছু করা সর্বাবস্থায় বর্জনীয়। আবার যত্রতত্র মসজিদ নির্মাণ করে রাখলেও চলবেনা। মসজিদের যথাযথ দেখভাল, নিয়মিত আযান ও নামজের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কোনো স্থানে মসজিদ স্থাপন নিয়ে বিভেদের সৃষ্টি হলে তাহলে তা ‘যেরার’ বা ক্ষতিকর মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে (তওবাহ্ ৯/১০৭) উক্ত মসজিদ নির্মাণকারীরা গুনাহ্গার হবেন। এখন আসি উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তরে। প্রথম প্রশ্ন ছিলো মসজিদে একত্রে নারী পুরুষ সালাত আদায় করতে পারবে কি না। উত্তর পারবে। ইসলাম বিভেদের ধর্ম নয়। ইসলামের বিধান অত্যন্ত সুন্দর। ইসলাম নারী পুরুষ কে একত্রে সালাত আদায়ের পূর্ণ অনুমতি দেয়।তবে অবশ্যই সেখানে পর্দার ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং মেয়েদের কোনোরূপ সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবেনা। পুরুষের কাতারের পিছনে পর্দার মধ্যে পুরুষের জামাতের সাথে সালাত আদায়ের ব্যবস্থা করা যায়।সেক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য আলাদা ইমামের প্রয়োজন নেই।

মসজিদের দেওয়ালে লাল বাতি স্থাপন, কাবাগৃহের ছবি টানানো বা গম্বুজের আকৃতি বিশিষ্ট সুসজ্জিত টাইলস বসানো, আল্লাহ, মুহাম্মদ লেখা যাবে কি?
অনেক মসজিদের দেওয়ালে লালা বাতি ও সবুজ বাতি লাগানো থাকে। সবুজ বাতি জালানোর অর্থ সুন্নাত নামাজের সময় রয়েছে। আর লাল বাতি জালানোর অর্থ সময় নেই। এরুপ ব্যবস্থা রাখা ঠিক নয়। কেননা মিশকাত হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে ‘ইক্বামত হয়ে গেলে সুন্নাত ছেড়ে দিয়ে জামাতে যোগ দিলে ঐ ব্যক্তি পূর্ণ ছালাতের নেকী পেয়ে যায় (মুত্তাফাক্ব আলাইহ,মিশকাত হা/২৩৭৪)। সুতরাং এরুপ ব্যবস্থারাখার কোনো মানেই হয়না। মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বর্তমানে নানাভাবে মসজিদকে জাঁকজমক ভাবে সাজানো হয়ে থাকে যা নিতান্তই অপচয় ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে রীতিমত বিদআতের শামিল হয়ে যায়। মসজিদের একপাশে ‘আল্লাহ ‘ ও একপাশে ‘মুহাম্মদ’ লেখা পরিস্কারভাবে শিরকের অন্তভুর্ক্ত। অনুরুপভাবে ক্বিবলার দিকে চাঁদতারা বা তারকার ছবি নিষিদ্ধ। মুসলমান ‘আল্লাহ’ নামক কোনো শব্দের ইবাদত করেনা। বরং তারা অদৃশ্য আল্লাহর ইবাদত করে।যনি সূর্য,চন্দ্র,তারকা ও বিশ্বমন্ডলের স্রষ্টা।তার সৃষ্টি তার মর্যাদার সঙ্গে শামিল হতে পারেনা।তাঁর নিজস্ব আকার রয়েছে কিন্তু তা কারু সাথে তুলনীয় নয় (শুরা ৪২/১১)। অনুরুপভাবে মসজিদে ক্বিবলার দিকে ‘আল্লাহ’ ও কাবা গৃহের ছবি এবং মেহরাবের দুপাশে গম্বুজের আকৃতি বিশিষ্ট দীর্ঘ খাড়াযুক্ত সুসজ্জিত টাইলস্ বসানো যাবেনা। মেহরাবের উপর কোনোরূপ নকশাও করা যাবেনা (মিরআত ২/৪২৮)। সুতরাং এইসমস্ত কর্মকাণ্ড সর্বাবস্থায় বর্জনীয়। এগুলো অধিক পুণ্যবান ভেবে পালনা করা যাবেনা। এতে করে অমুসলিমদের উপাসনা গৃহের অনুসরণের শঙ্কা থাকে তারা যেমন বিভিন্ন জীব জন্তুর ছবি স্থাপন করে। যা অবশ্যই বর্জনীয়। মসজিদ হবে অনাড়ম্বর ও সাধাসিধে। কোনো জাঁকজমক করা যাবেনা। মসজিদ নির্মানে তাই সতর্কতার সাথে ইসলামী নির্মাণশৈলী অনুসরণ করতে হবে। মসজিদ নিয়ে কোনোরূপ গর্ব করা যাবেনা। জ্ঞাতব্য যে কবরকে মসজিদ থেকে আলাদা রাখতে হবে এবং যেসব কবরে পূজা হয়(মাজার), সিজদা হয়, কিছু মানত করা হয় ঐসব কবরের পাশে মসজিদ নির্মাণ করা হারাম। এগুলো শিরকের অন্তভুর্ক্ত, আল্লাহ শিরকের গুনাহ কখনই ক্ষমা করেননা(তওবা ব্যতীত) (সুরা নিসা ৪/৪৮)।

আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন।

7
0
Mahmud Hasan Joy

Mahmud Hasan Joy

Writing is the way to share ones thought, inner imagination. Showing respect to all the quotes, references holders and holy books which are followed to enrich writing.

2 thoughts on “মসজিদে নারী-পুরুষ নামাজ ও মসজিদ সুসজ্জিতকরন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *