বিসিএস যখন স্বপ্ন
বিসিএস আজ বাংলাদেশের প্রতিটা চাকরি প্রত্যাশি ছাত্র ভাই-বোনদের স্বপ্ন। যে স্বপ্ন পূরণ করতে পাড়ি দিতে হয় এক বিশাল সময়। প্রথমেই বাছাই পর্ব(এমসিকিউ) তারপর লিখিত এবং শেষে ভাইবা। লিখিত আর ভাইবার মার্কের এর উপর বিসিএস এর রেজাল্ট নির্ভর করে। ক্যাডার নন ক্যাডারও মার্কস এর উপর নির্ভর করে। তবে অবশ্যই আপনাকে আগে বাচাই পর্বে টিকতে হবে। বিশার এই জার্নি ইনজয় করতে হবে ও ধৈর্যের অসীম পরীক্ষা দিতে হবে এ সময়।
চাকরির ক্ষেত্রে সরকারি আর বেসরকারি চাকরি মাঝে এত তফাৎ কোথায়? এক কথায় বলা যায়, হিউম্যান ন্যাচার হিসাবে বাংলাদেশের মানুষ খুব আরাম ও শান্তি প্রিয় তাই তারা চাই ঝামেলামুক্ত, স্বস্তির আর শান্তির জীবন প্রত্যাশা করে। তাই বলা চলে সরকারি চাকরি তথা বিসিএস প্রতিটি ছাত্রেরই স্বপ্ন। কেননা সারা জীবন কষ্ট করতেই হবে বরং সরকারী করাই ভাল। তবে হতাশ হবার কিছু নেই, কারণ টিকে থাকতে হলে আপনাকে জীবনে অনেক কিছুই করা লাগতে পারে। অবশ্যই যে বেশি পরিশ্রমী সে আপনার থেকে এগিয়ে থাকবে। এটা মাথায় রেখে পরিশ্রম চালিয়ে যাওয়া দরকার।
যদি বিসিএস প্রস্তুতির কথা বলা হয়, তাহলে দেখা যাবে কেউ ২/৩ বার বিসিএস দিয়েছে কিন্তু বাছাই পর্বেই বাদ হয়ে গিয়েছে। কেউ আবার ১ম বিসিএস এই সফলকাম হয়ে গেছে । আবার কেউ কেউ রিটেন ভাইবা দিয়েও হতাশ হচ্ছেন। নিজের প্রতি গভির বিশ্বাস আর কৌশল আপনাকে অন্যদের অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলবে। মনে রাখবেন বিসিএস এর পুরো প্রক্রিয়াটাই আপনাকে বাদ দেওয়ার কৌশল। আর নিজেকে ঠিক ঐ কৌশল এর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আপনাকে যোগ্য বলে প্রমান দিতে হবে সব পেড়িয়ে সত্যিই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এর একজন হতে চান। তাই প্রথমেই সিলেবাস আর বিগত বছর এর প্রশ্ন দেখতে হবে সেটার ধরন বোঝার জন্য।
সিলেবাস এর পরিব্যক্তি আর প্রশ্নের ধরন আপনার স্ট্রং ও উইক পয়েন্ট খুজতে সাহায্য করবে। আর সেভাবে আপনাকে প্রিপারেশন নিয়ে আগাতে হবে। মনে রাখবেন আপনি যত স্যাক্রিফাইস করবেন, লক্ষ্যের দিকে তত ফোকাস করতে পারবেন। হতে পারে আপনার অভাব নেই তবুও স্যাক্রিফাইস করুন। সারাদিন বই নিয়ে বসে থেকে মাথা জ্যাম করা যাবে না । উন্মুক্ত ভাবে বিষয় গুলো উপলব্ধি করতে হবে। আর ম্যাপ আকারে ইনফেরমেশন গুলো মাথায় রাখতে হবে। প্রয়োজন বোধে ১৫/১৬ ঘন্টা করে পরতে পারেন। আপনার ব্যাসিক যত ভাল হবে পড়াগুলো আয়ত্ত করতে তত কম সময় লাগবে। ১৫/১৬ ঘন্টার কাজ আপনার ১০/১২ ঘন্টায়ও কভার হয়ে যেতে পারে। তাই ভাবুন আপনার কতক্ষন সময় পড়া উচিৎ।
বিসিএস প্রিপারেশন কৌশল নিয়ে পরবর্তীতে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ। বিসিএস স্বপ্ন যে অনার্স পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য শুধু এমনটা কিন্তু নয় । আজকের শিশু কিন্তু আগামীর ভবিষ্যৎ। জেনে থাকবেন অনেকেই বলেন, আগে ১-১২ ক্লাস তো পাস করো তারপর না হয় বিসিএস। মানে ১-১২ ক্লাস আপনাকে ভাল জানতেই হবে। ভাল কিছু করার ও করানোর স্বপ্ন ছোট থেকেই দেখা উচিৎ । ১-১২ ক্লাসের সব ব্যাসিক কাজে আসবে বিসিএস এর জন্য। তাই যারা এখন এই লেভেলে আছে তাদের প্রতি পরিবারের কেয়ারিং হওয়া উচিৎ যেন যে কোন কনসেপ্ট তারা উপলব্ধি করতে পারে। আর ভাবি বিসিএস ক্যাডারদের নিজেকে আরো পোক্ত করা উচিৎ।
যে সকল কাজ প্রকৃত পক্ষে আপনার কোন দরকার নেই, যা আপনার কাজে আসে না, যার ভাল কোন ইফেক্ট নেই সেই সকল কাজ আজই বাদ দিয়ে দিন। কারন, মহৎ পেশার জন্য মহৎ পড়াশোনা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। যার জন্য ফালতু কাজে আর সময় নয়। ভাববেন বিসিএস প্রিপারেশন যেন হয় আপনার জীবনের সব চাইতে বড় ইনভেস্ট নিজের প্রতি। আসলেই এই সময়ে আপনি নিজেকে গড়ে নিতে না পারলে আজীবন আফসোস করতে হবে।
আমরা কিন্তু মেধার জন্য পিছিয়ে থাকিনা, পিছিয়ে থাকি সুযোগ এর জন্য, গাইড লাইন এর জন্য। তাই আমরা চাই আপনিও সুযোগকে কাজে লাগান আর গাইড লাইন ফলো করে বাংলাদেশ সরাসরি কর্মকমিশনের একজন হয়ে উঠুন। দেশ ও জাতির সেবার জন্য আপনার মেধাও শ্রম বিলিইয়ে দিয়ে যান।
বিসিএস এর প্রিপারেশন কষ্টকর, শ্রম সাধ্য, যযন্ত্রনার এবং ভাগ্য প্রসন্ন। শুধু মাথা ঠান্ডা করে নিজেই নিজের দায়িত্ব নিয়ে নিন যা ভাবছেন তার চাইতে বেশি পাবেন ইনশাআল্লাহ। পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না। তাই নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা চালান। কারন আপনার পরিবার আপনার জন্য অপেক্ষা করছে, জাতি মেধাবীকে খুজছে।
আলহামদুলিল্লাহ, আজকে এলোমেলো অনেক দিক উপস্থাপন করেছি যেন আপনি বিসিএস এর প্রতি আরো আগ্রহী হয়ে উঠেন। আপনার কোন নির্দিষ্ট বিষয় জানার আগ্রহ থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আমরা উত্তর করতে চেষ্টা করব। দিকনির্দেশনা গুলো গুনীজন হতে সংগ্রহ করা।
আসসালামু আলাইকুম
ধন্যবাদ।